ঢাকা,মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

মিয়ানমার থেকে ঢুকছে হরদম

চকরিয়ায় অবৈধ হাটে চোরাচালানের গরু

নিজস্ব  প্রতিনিধি, চকরিয়া ::  সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানির পশু দেশে ঢোকা বন্ধ রয়েছে, এমন খবর প্রচার হলেও কার্যত তা কাগজে–কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, এখনো সীমান্ত দিয়ে দেদারছে ঢুকছে চোরাচালানির মাধ্যমে মিয়ানমারের গবাদি পশু। সেই পশুতে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলা এখন সয়লাব। সামনের কোরবানির ঈদের বাজারে এইসব পশু ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। এতে মাথায় হাত উঠেছে প্রান্তিক কৃষক ও খামারিদের।

সম্প্রতি সরেজমিন চকরিয়ার কয়েকটি অবৈধ পশু বিকিকিনির হাট ঘুরে দেখা গেছে, অরক্ষিত সীমান্ত পথ দিয়ে ঢোকা মিয়ানমারের চোরাচালানির গবাদি পশুতে সয়লাব হয়ে পড়েছে চকরিয়া। এসব পশু প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলেও যাচ্ছে ট্রাকে ট্রাকে করে। চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালীর হাসেরদীঘি, ডুলাহাজারার রংমহল, খুটাখালীসহ বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত অবৈধ হাটেও এসব গবাদি পশুর বেচাবিক্রি অব্যাহত রয়েছে। এতে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন দেশীয় খামারি ও ঘরোয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এদিকে চোরাচালানির এসব গবাদি পশুর হাট বন্ধ করার জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন–শৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সভায় জোর দাবি উঠে জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে। ওই সভার রেজুলেশনেও বিষয়টি লিপিবদ্ধ হয় পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ পশুর হাট বন্ধ করা হবে মর্মে। কিন্তু তা কার্যত রেজুলেশনেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। এ ব্যাপারে সুরাজপুর–মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, চোরাচালানির পশু ঢোকা নিয়ে উপজেলার মাসিক আইন–শৃঙ্খলা সভায় বারবার বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে এসব অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নজির দেখা যাচ্ছে না। এতে সরকার যেমন এক টাকাও রাজস্ব পাচ্ছে না তেমনি দেশীয় খামারি এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বসছে পথে। এবারের কোরবানির পশুর হাট বসলেই তা প্রতীয়মান হবে।

খায়রুল বাশার সোহেল নামে একটি এগ্রো ফার্মের সদস্য বলেন, আমরা কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তা মিলে খামারটি গড়ে তুলি। বর্তমানে খামারে লালন হচ্ছে অন্তত ২০টি গরু। অপেক্ষায় আছি আগামীর কোরবানির ঈদে এসব গরু বিক্রি করার। কিন্তু মিয়ানমার থেকে চোরাচালানির মাধ্যমে দেশে ঢোকা গবাদি পশুর কারণে আমাদের গরু উচিৎ মূল্য পাব কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, চোরাচালানির পশুর হাট বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে কোরবানির হাট চালু হওয়ার আগে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে জরুরি বৈঠক করা হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যাতে দেশীয় খামারি ও ঘরোয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের লালিত গবাদি পশু বিক্রির বিপরীতে যথাযথ মূল্য পায়।

চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রতিবছরের মতো এবারের কোরবানির ঈদের আগে গবাদি পশু বিকিকিনির জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ২১টি হাট বসবে। এজন্য আগাম প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: